
বিশেষ প্রতিবেদকঃ পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার ছৈলাবুনিয়া গ্রামের কৃষক সমীর চন্দ্র সামান্য পুঁজি আর অদম্য ইচ্ছাশক্তি দিয়ে লাউ চাষে সফলতা অর্জন করেছেন। মাত্র ৩২ শতাংশ জমিতে লাউয়ের চারা রোপণ করে ইতোমধ্যে তিনি প্রায় ৪০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছেন। এছাড়া মাচায় থাকা লাউ বিক্রি করে আরও ২০ হাজার টাকার আয়ের আশা করছেন তিনি।
সমীর জানান, নিজের কোনো চাষের জমি না থাকার কারণে স্থানীয় মনির হোসেনের পরিত্যক্ত বাড়ির সামান্য জমি লিজ নিয়ে বর্ষা মৌসুমে লাউ চাষ শুরু করেন। উঁচু-নিচু ওই জমিতে অন্য ফসল ভালো হওয়ায় বর্ষার সময়ই তিনি লাউ চাষ করেন। কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহার না করে শুধুমাত্র জৈব সার প্রয়োগে উৎপাদিত লাউয়ের স্থানীয় চাহিদাও ভালো।
তিনি বলেন, “ছেলে-মেয়ের পড়াশোনা ও সংসার চালানোর জন্যই এই উদ্যোগ নিয়েছি। মাত্র ১০ হাজার টাকার খরচে বীজ, সার ও মাচা তৈরি করেছি। একই মাচায় বর্ষায় দুইবার লাউ চাষ করে লাভ হয়েছে, যা পরিবারে স্বস্তি এনেছে।”
সমীর শীতের মৌসুমেও একই জমিতে বেগুন, টমেটোসহ নানা জাতের শাকসবজির চাষের পরিকল্পনা করছেন। এ জন্য বীজ বুনে চারা তৈরি রেখেছেন।
শনিবার সকালে তাঁর বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, তিনি মাচা থেকে লাউ সংগ্রহ করে বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন। ঘরের সামনে ২৫টি বস্তায় আদা চাষ করছেন এবং গোয়ালঘরের পাশে ৪টি চাঁড়িতে কেঁচো চাষ করে জৈব সার তৈরি করছেন, যা নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার ও বিক্রি করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা জিয়ায়ুর রহমান বলেন, “সমীর চন্দ্র একজন আদর্শ ও পরিশ্রমী কৃষক। বিষমুক্ত সবজি ও বিভিন্ন ফসল ফলিয়ে নিজের চাহিদা মিটিয়ে বাজারেও বিক্রি করছেন। তার সফলতা প্রমাণ করে, ছোট জমিতেও সঠিক পরিকল্পনা ও পরিশ্রমে সফলতা আসা সম্ভব।”
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, “সমীরের মতো কৃষকরা আমাদের সম্পদ। তার সাফল্য অন্য কৃষকদেরও অনুপ্রাণিত করছে। আমরা তার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রযুক্তিগত সহায়তা দিতে প্রস্তুত।”