
বিশেষ প্রতিবেদকঃ দেশজুড়ে ডেঙ্গুর দাপট গত কয়েক সপ্তাহে আরও বেড়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা ছয় হাজার ছাড়িয়ে গেছে এবং মৃত্যু প্রায় আড়াই শতাধিক। বিশেষ করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী ও অন্যান্য জেলা শহরে সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। বর্ষাকালে মশার প্রজনন বেড়ে যাওয়ায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ অপরিহার্য। মশার প্রজনন ক্ষেত্র বন্ধ করা, আশপাশ পরিচ্ছন্ন রাখা এবং মশার কামড় থেকে সুরক্ষা পাওয়া অত্যন্ত জরুরি। “দেশজুড়ে ডেঙ্গুর দাপট রোধ করতে না পারলে পরিস্থিতি আরও গুরুতর হয়ে উঠতে পারে,” বলেন একজন স্বাস্থ্য বিশ্লেষক।
সরকার ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে বিশেষ কমিটি গঠন করেছে এবং পরিচ্ছন্নতা অভিযান জোরদার করেছে। হাসপাতালগুলো ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত থাকলেও রোগীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় চাপ তৈরি হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ওষুধ, রক্তদান ও চিকিৎসকদের ঘাটতি কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি করছে।
তবে জনগণের মধ্যে ডেঙ্গু সচেতনতা এখনও পর্যাপ্ত নয়। অনেকেই প্রয়োজনীয় সাবধানতা নিচ্ছেন না এবং পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে অবহেলা করছেন, যা ডেঙ্গু রোগের বিস্তার বাড়াচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা আবারো বলছেন, শুধুমাত্র সরকার নয়, জনগণেরও দায়িত্ব সজাগ থাকা।
ডেঙ্গু ভাইরাস মশার মাধ্যমে ছড়ায় এবং এটি একটি ঝুঁকিপূর্ণ রোগ। এর উপসর্গ যেমন জ্বর, মাথাব্যথা, শরীর ব্যথা, চোখ ব্যথা এবং রক্তক্ষরণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া জরুরি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সবাইকে বাড়ির আশপাশে জমে থাকা পানি পরিষ্কার রাখতে, মশার ডিম ধ্বংস করতে এবং রাতে মশারি বা সুরক্ষামূলক পোশাক পরিধান করতে সতর্ক করেছে।
ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব রোধে সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে। পরিচ্ছন্নতা রক্ষা, দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ছাড়া দেশজুড়ে ডেঙ্গুর দাপট মোকাবিলা সম্ভব নয়। তাই সরকার, স্বাস্থ্যকর্মী এবং সাধারণ জনগণকে মিলেমিশে কাজ করতে হবে।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কার্যক্রম ত্বরান্বিত করা হচ্ছে। তবে সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে ডেঙ্গুর প্রভাব ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। তাই দেশজুড়ে ডেঙ্গুর দাপট প্রতিরোধে সকলের একযোগে কাজ করার প্রয়োজনীয়তা বেড়েছে।