
এসএম বদরুল আলমঃ ঢাকা প্রকৌশল সার্কেলের অধীন কর্মরত গণপূর্ত অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমানকে ঘিরে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে তাঁর অবৈধ সম্পদ নিয়ে। ঘনিষ্ঠ সহকর্মী থেকে শুরু করে ঠিকাদারি মহল—সব জায়গাতেই ঘুরে বেড়াচ্ছে একই প্রশ্ন: কীভাবে একজন সরকারি প্রকৌশলী কয়েকশ কোটি টাকার মালিক হলেন?
অভিযোগ রয়েছে, সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে দীর্ঘদিন ধরে প্রকল্প ফান্ডিং থেকে অর্থ আত্মসাৎ, টেন্ডার কারসাজি ও প্রভাবশালী ঠিকাদারদের সঙ্গে যোগসাজশ করে তিনি ব্যাপক দুর্নীতি করেছেন। জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) একটি প্রকল্পে দায়িত্ব পালনের সময় প্রায় ১৭ কোটি ৮ লাখ টাকার অনিয়মের অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর দাবি, এটাই কেবল প্রকাশ পাওয়া তথ্য, বাস্তবে অনিয়মের পরিমাণ আরও বেশি।
মাহবুবুর রহমান ই/এম সার্কেল-৩–এর আওতায় থাকা টেন্ডার ও ক্রয় প্রক্রিয়াকে দীর্ঘদিন ধরে নিজের নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তাঁর ঘনিষ্ঠ কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কেউ সরকারি কাজ পাওয়ার সুযোগ পান না বলেই জানা যায়। এসব ঠিকাদারের মাধ্যমে যন্ত্রপাতি ক্রয়-বিক্রয়ে বড় অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার তথ্যও পাওয়া গেছে।
অভিযোগকারীদের দাবি, সরকারি চাকরির বেতন আর ভাতায় চলা এই প্রকৌশলীর জীবনযাত্রা অত্যন্ত বিলাসী। রাজধানীর ইকবাল রোডে তাঁর রয়েছে ৩,৫০০ বর্গফুটের একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট। আগারগাঁও এলাকার ৬০ ফিট সড়কে চারতলা বিশিষ্ট একটি ভবন তাঁর মালিকানায় রয়েছে। এছাড়া রাজধানীর বনশ্রীর আমুলিয়া হাউজিং এলাকায় তাঁর নামে ১৫ বিঘা জমির তথ্য জানা গেছে। এগুলো কেবল দৃশ্যমান কিছু সম্পদ; ভেতরে ভেতরে আরও বিপুল সম্পদ লুকিয়ে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগকারীরা জানিয়েছেন।
গণপূর্ত অধিদপ্তরের ভেতরের একাধিক কর্মকর্তা এবং কর্মী মনে করেন—মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্ত হলে তাঁর অঢেল সম্পদের উৎস বের হয়ে আসবে এবং দুর্নীতির একটি বড় চক্রের কার্যক্রম প্রকাশ পাবে। তবে অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় সাধারণ মানুষসহ অধিদপ্তরের সৎ কর্মকর্তারা দাবি তুলেছেন—দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত সত্য উদঘাটন করা হোক এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।